বরিশালের মুলাদী উপজেলার ডিক্রিরচর এলাকায় ছোট ভাইকে হত্যার ভয় দেখিয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে তার প্রতিবেশী চাচা ইদ্রিস
হাওলাদারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তার আরও তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ইদ্রিস হাওলাদার ডিক্রিরচর এলাকার বাসিন্দা।
মামলার রায়ের বরাত দিয়ে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মো. আজিবর রহমান জানান, বেশ কয়েক বছর আগে ওই স্কুলছাত্রীর মা মারা যান। ওই ছাত্রীর বাবা ঢাকায় কাজ করেন। স্ত্রী মারা যাওয়ার কারণে তার ছেলে-মেয়ে গ্রামে একা হয়ে পড়ে। সন্তানদের দেখাশোনার জন্য স্কুলছাত্রীর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর কাজের সুবাদে তিনি ঢাকায় যান। প্রথম দিকে সৎ মা তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন। তবে কয়েক মাস পর কারণে-অকারণে নির্যাতন চালাতে শুরু করে সৎ ছেলে-মেয়ের ওপর।
তিনি আরও জানান, সৎ মায়ের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে মাঝেমধ্যে স্কুলছাত্রী তার ভাইকে নিয়ে প্রতিবেশী চাচা ইদ্রিস হাওলাদারের বাড়িতে আশ্রয় নিত। সেই সুযোগে চাচা স্কুলছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে স্কুলছাত্রীর ছোট ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেন ইদ্রিস হাওলাদার। এভাবে ভয় দেখিয়ে ওই মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি।
পেশকার জানান, সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ সৎ মায়ের হাতে মার খেয়ে ইদ্রিস হাওলাদারের বাড়িতে আশ্রয় নেয় স্কুলছাত্রী ও তার ভাই। রাতে ইদ্রিস হাওলাদারের স্ত্রী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে গেলে স্কুলছাত্রীকে ফের ধর্ষণ করেন ইদ্রিস হাওলাদার। এরপর সে অসুস্থ হয়ে পড়লে ধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হয়। ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবার বাড়িতে এসে ওই বছরের ৩০ জুলাই বাদী হয়ে ইদ্রিস হাওলাদারকে আসামি করে মামলা করেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুলাদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন খান একই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ইদ্রিস হাওলাদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত উপরোক্ত রায় দেন।