মোঃ মিজানুর রহমানঃ
যদি জানতে চাওয়া হয় আপনি সর্বশেষ কখন চিঠি লিখেছেন? উত্তরের জন্য স্মৃতির পাতা খুঁজতে হবে। ৯০ দশকের আগে জন্ম নেওয়া লোকগুলো হয়তো খুজে পেতে পারেন, তবে বিংশ শতাব্দির জন্ম নেওয়া তরুনদের ডাক বিভাগ সম্পর্কে জানতে সাহায্য নিতে হবে গুগুলের। আমরা কি জানি ৬৮ হাজার গ্রামের বাংলাদেশে ৯৮৮৬টি পোষ্ট অফিস রয়েছে। দেশে এত বেশী অফিস শুধুমাত্র ডাক বিভাগেরই রয়েছে। গ্রামের ডাকঘরগুলোতে ২জন লোক নিয়োজিত ছিলেন তাদের একজন পোষ্ট মাষ্টার ও অন্যজন ডাক পিয়ন। লোকজনের নিকট ডাক পিয়নের কদর ছিল বেশী। সুখ-দু:খ, কর্মসংস্থান সকল খবরই দিতেন এই ডাক পিয়ন। পোষ্ট অফিস, কতো রঙ্গীন স্মৃতি জড়ানো..আজ সেই ডাকঘর, ডাক বক্স অযত্ন অবহেলায় পরে আছে প্রেমিক যুগলের হাতের ছোয়া নিয়ে কতো চিঠি আসতো…এই ডাক বক্সে, নুতন বউ তার স্বামীর চিঠি পড়তো লুকিয়ে…দুরে থাকা বাবার কষ্টের কামানো টাকা আসতো মানি অর্ডারে…কতো আশার কতো স্বপ্নের, কতো স্মৃতির ডাক ঘর, ডাক বক্স আজ বড় একা… মোবাইল, ফেইসবুক ও ইমেইলের প্রযুক্তির ছোয়ায়- ডাকঘরে মরিচা ধরেছে অনেক আগেই। প্রতি বছর প্রায় ২০০ কোটি টাকার অধিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। মরিচা ধরা ডাকঘরে বার্নিশ দিতে মোবাইল ব্যাংকিং নগদ চালু করা হলেও বিকাশ এর ভীড়ে পথ হারিয়েছে সেটিও। ডাক বিভাগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসগুলো আধুনিক দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থার কারণে লাভজনকভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে। বর্তমানে পার্সেল ও টাকা পাঠানোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসগুলো এই ব্যবসা লুফে নিয়েছে। কিন্তু ডাক বিভাগ এ দুটি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসের চিঠি আদান-প্রদানে থাবা বসিয়েছে বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিস। ডাকঘর নিয়ে ডিজিটাল সরকারের নতুন চকম কি হতে পারে তা দেখার অপেক্ষায়।